অরুনাভা দাদার দাদার সাথে পরিচয় ফেসবুকে। পরিচয়ের বয়স হিসাব করলে ১০ বছরের কম হবে না। প্রথম দিকে ম্যাসেজে প্রায়ই কথা হইত। বেশিরভাগ কথাবার্তার বিষয় ছিল সাইকেল। যতদূর মনে পড়ে প্রথমেই কথা হইছিল সাইকেলে ফর্ক নিয়া। তাঁর সাইকেল কোন একটা এক্সিডেন্টে ফর্ক ভেঙ্গে গেছিল অথবা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আরেকটা বিষয় মনে আছে সাইকেলের ডিজিটাল স্পিড মিটার বা বাইক কম্পিউটার নিয়া কথা হইছিল। যখন আমরা এইসব বিষয় নিয়া কথা বলতাম তখন ঢাকায় অথবা পুরা বাংলাদেশেও খুটিনাটি জিনিশপত্র পাওয়া ছিল কঠিন।
এর পরে দীর্ঘদিন মনে হয় কথাবার্তা হয় নাই। হলেও খুবই সামান্য। বছর দুয়েক আগে আগস্টের দিকে একদিন ম্যাসেজ পাঠালেন যদি সম্ভব হয় একটা টিনের ভটভটি ম্যানেজ করে দেয়ার জন্য। আমাদের পুরানা সাইক্লিস্ট বন্ধু মুজাক্কির ভাইয়ের ফেসবুক পোস্টে দেখেছিলাম তিনি একটা টিনের ভটভটি কিনেছেন সেটা নারায়ণগঞ্জ থেকে। মুজাক্কির ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখি ফোন নাম্বার হারিয়ে গেছে। মনা ভাইয়ের মাধ্যমে নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম পহেলা বৈশাখের মেলায় তিনি কিনেছিলেন নারায়ণগঞ্জের নদীর ঐপার থেকে।
সালেহীন ভাইয়ের কাছ থেকে একটু খোঁজ নিয়া দুইদিন গিয়েছিলাম। একবার দুর্গা পুজার সময় আরেকবার অন্য কোন এক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময়। দুই বারই ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছিল। এর মধ্যে একবার চকবাজার গিয়েছিলাম, সেখানে খেলনার দোকানে খোঁজ নিয়া জানতে পারছিলাম অন্তত ৫০ টা অর্ডার দিলে বানিয়ে দিতে পারবে। তখন খরচ পরে যায় অনেক বেশি।
তারপর অনেকটা নিষ্কৃয় ছিলাম বলা যায়। অনেকদিন পরে হঠাৎ একদিন নিয়াজ ভাইয়ের পোস্ট অথবা কমেন্টের মাধ্যমে বেনজীর আপার মাধ্যমে জানতে পারছিলাম চকবাজারে এক বুড়া লোক সন্ধ্যার পরে মাঝে মাঝে বসেন। এরপরে পুরা দায়িত্ব গিয়া পড়ছিল বেনজির আপার উপর। দেখা গেলে তিনিও পাচ্ছিলেন না। সব সময় এমনই হয়েছে। যখন কাউকে বলেছি কেউ আর যোগাড় করে দিতে পারে নাই। কিন্তু দুইমাস পরে তিনদিন আগে হঠাৎ বেনজীর আপার ফোন টিনের ভটভটি পাওয়া গেছে। কয়টা লাগবে?
অবশেষে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষার পরে জিনিশটা পাওয়া গেল।
বেনজীর আপাকে বিশেষ ভাবে আলাদা ধন্যবাদ, কারণ তিনি গুরুত্বটা বুঝতে পেরেছেন।
২১ কার্তিক ১৪২৭