আমার মা একদমই পড়ালেখা জানতেন না। স্বাক্ষরও করতে জানতেন না। খুব প্রয়োজন হলে টিপসই দিয়ে কাজ চালাতেন না। আমি যখন চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি তখন মাকে স্বাক্ষর করতে শিখিয়েছিলাম। আমি ছোটবেলা থেকেই প্রচুর গান শুনতাম। মা-ও আমার সঙ্গে প্রচুর গান শুনতো, এবং গান শুনে কাঁদতো। মা সব সময় যে কোন গানকেই দেহতত্ত্ব বা ঈশ্বরতত্ত্বর সঙ্গে মিলাইত। মার সঙ্গে এই নিয়া একদিন বেশ তর্ক হইল। রাধা রমনের একটা গান আছে ‘আমার বন্ধু দয়াময়’। এই গানটা নিয়া বেশ তর্ক হইল আমি বলতেছিলাম এটা প্রেমের গান। মার কথা হইল এটা কোন মতেই প্রেমের গান হইতে পারে না। আমি এখন বুঝি মা’র বুঝার ক্ষমতা ছিল অনেক। আমি একদমই গণ্ডমূর্খ ছিলাম। মার সকল শিক্ষাই ছিল আশেপাশে মানুষ আর জীবন থেকে নেয়া। আমি তখন কিছুই বুঝতাম না সেটা এখন বুঝি। আর এখন আশেপাশের মানুষগুলাকে দেখে আরো বুঝি আমি দিন দিন আরো মূর্খ হচ্ছি।
মমতাজের কণ্ঠে ‘আমার বন্ধু দয়াময়’ গানটা আবার শুনতেছিলাম। গানে মমতাজ ব্যাখ্যা করলেন, সাধকের মতে প্রেম হইল পাঁচ রকমের। সূক্ষ্ম, শান্ত, দাস্য, বাৎসল্য, মধুর। আর রাধা রমনের এই গানটা পুরাপুরি সূক্ষ্ম প্রেমের গান। যা ঈশ্বরকে উদ্দেশ্যে করে গাওয়া।
‘আমার বন্ধু দয়াময়
তোমারে দেখিবার মনে লয়।’
৩০ বৈশাখ ১৪২৫