মেরিন ড্রাইভে সাইক্লিং

ঈদের সপ্তাহ দুয়েক আগে ঢাকা থেকে সিলেট সাইক্লিং শেষে ট্রেনে ফিরছি। এমন সময় ‘মিরপুর সাইক্লিস্ট’ থেকে মঈন ভাইয়ের ফোন। মিরপুর সাইক্লিস্ট গ্রুপ কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার সাইক্লিং করবে মেরিন ড্রাইভ ধরে। এর আগেও ফেসবুকে বলেছিলেন আমাকে যেতে হবে। আমি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলাম না যেতে। কিন্তু নিজে থেকে ফোন দেয়ার পর আর না করতে পারলাম না। না করতে না পারার আরেকটা কারণ মঈন ভাইয়ের সঙ্গে ইয়াসির ভাইয়েরও অনুরোধ। এর আগে ইয়াসির ভাইয়ের সঙ্গে  কখনো কথা হয় নাই তাই প্রথম অনুরোধ না রাখাটাও একটু জটিল।

সবকিছু ঠিকঠাক হলো, আমরা ঈদের পরের দিন বিকালে সাইকেল পাঠিয়ে দিব। আর সন্ধ্যায় আমরা বাসে রওনা দিব। সমস্যা দেখা দিল সাইকেল নিয়ে। কোন সাইকেলটা নিয়ে যাব? কিছুদিন আগে একটা ‘ট্রেক ৪৫০০’ কিনেছি সেটা নিয়ে যাব নাকি পুরানো ‘পাইথন রক’। নতুন সাইকেলের অতিরিক্ত টিউব সঙ্গে নাই। তাই ঠিক করলাম পাইথন নিয়েই রওনা দিব। অনেক দিনের সঙ্গী পাইথন নিয়েই বাসা থেকে বের হলাম।

আসাদগেইট, জাতীয় সংসদ ভবন, খামার বাড়ি, আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া পার হওয়ার পর পেছন থেকে একজন জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই আপনে কি রাইডে যাচ্ছেন?’ তাকিয়ে দেখি আমার মতই একজন। মুখভর্তি দাড়ির সঙ্গে মাথায় হ্যালমেট, হাতে গ্লাবস, পিঠে ব্যাগ। হ্যালমেটটা একটু অন্য রকম। হ্যালমেট দেখে মনে হবে মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছেন। আমি নিশ্চিত এমন হ্যালমেট হয়তো এই ট্রিপে আর কারও থাকবে না। আর এই হ্যালমেটটাই হয়তো পুরা ট্রিপে উনাকে আলাদা করে রাখবেন। পাশাপাশি চেহারার মধ্যেও একটা আর্ট আছে। তাঁর ভেশভুশা দেখে আমিও ধারণা করে নিলাম সেও যাচ্ছে আমাদের সঙ্গে। উত্তরে, ‘হ্যাঁ’ বলে দুইজনে যাত্রা শুরু করলাম। আমাদের যেতে হবে মিরপুর ১৩ নাম্বার। কিন্তু কোথায় যেতে হবে আমি ঠিক জানি না। তবে আমার সাইকেল সঙ্গী কিছুটা চেনেন বুঝা গেল। কথায় কথায় দুইজনের পরিচয়পর্ব শেষ হয়ে গেল। তাঁর নাম ইমরান।

 

স্পটে পৌঁছে দেখি তখনও তেমন কেউ আসে নাই, মাত্র ৫/৬ জন। তবে একজন দুইজন করে এক সময় সবাই চলে আসলো। কিছুক্ষণ পরে পিক-আপও হাজির। লিটন ভাইয়ের তত্ত্বাবধানে একে একে ১৯ টা সাইকেল তোলা হলো। বাকি সাইকেলগুলা রেখে দেয়া হলো বাসের পাশাপাশি আমাদের সঙ্গে যাবে বলে। আমার সাইকেলটা পিকআপের সঙ্গেই। সাইকেল বাঁধতে বাঁধতেই হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। বৃষ্টির পরে লিটন ভাইসহ আরো দুইজন পিকাপের সঙ্গে রওনা দিয়ে দিলো আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে।

এই গ্রুপের কারও সঙ্গেই পরিচয় নাই একমাত্র মঈন ভাই আর ধ্রুব ভাই ছাড়া। কেউ কেউ হয়তো ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় আছেন কিন্তু বেশির ভাগই অপরিচিত। তবে ভ্রমণকারীদের জন্য অপরিচিত কোন ব্যাপার না। আর ভ্রমণসঙ্গী যদি হয় সাইক্লিস্ট তাহলে তো কথাই নেই। নাম না জানলেও এমনিতেই আড্ডা জমে উঠছিল। আড্ডা দিতে দিতেই শ্যামলীর বাস হাজির হয়ে গেল। আমাদের অবশিষ্ট্য সাইকেলগুলা আস্তে আস্তে তুলে দেয়া হলো।

 

কে কোন সিটে বসবেন এটা ঠিক করা হলো লটারীর মাধ্যমে। যদিও প্রথমে সবাই বসলেন লটারীর সিটে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই যাঁর যাঁর পছন্দের সঙ্গীর সঙ্গে বসে পড়লেন। ইমরান ভাই ছিলেন সামনের দিকে কিন্তু তিনি আমার সঙ্গে বসার জন্য পিছনে চলে আসলেন। সবাই বাসে উঠার পরে বাস ছেড়ে দিল। ঈদের কারণে ঢাকা প্রায় ফাঁকা। খুব অল্প সময়েই আমরা ঢাকা পার হয়ে গেলাম। এর মধ্যে ইমরান ভাইয়ের সঙ্গে আড্ডা জমে উঠলো। তিনি ছিলেন পিরোজপুরে ঢাকায় এসেছেন বেশিদিন হয় নাই। কলেজ শেষ করে ঢাকায় এসেছেন পড়াশুনা করার জন্য। মামারা চেয়েছিলেন পিরোজপুরের কোন এক কলেজে ডিগ্রি করুক। কিন্তু অনেকটা বিদ্রোহ করেই চলে এসেছেন ঢাকায়। আর বিদ্রোহীদের কেন জানি আমার সব সময় পছন্দ হয়।

আমাদের আড্ডার মাঝেই একদল গান গাওয়া শুরু করে দিলেন। বাসের মধ্যে বেশ উপভোগ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। অন্তত মাহফুজুর রহমানের সুরেলা কণ্ঠের চাইতে আমাদের সাইক্লিস্ট শিল্পীদের গান অনেক ভাল ছিল বলা যায় নির্দ্বিধায়। গান শুনতে শুনতেই কুমিল্লা পৌঁছে গেলাম। সেখান থেকে আমাদের সঙ্গে আরো দুইজন যুক্ত হলো। গতকালই আরো তিনজন কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়ে গেছে সাইকেল চালিয়ে। তাঁদের মধ্যে দুইজন চট্টগ্রাম পৌঁছে থেমেছেন তাঁদের সেখান থেকে উঠার কথা। বাকি একজন আল-আমিন চালিয়ে কক্সবাজারই চলে গেছে। কক্সবাজার থেকে আমাদের সঙ্গে যোগ দিবে আল-আমিন। গল্প করা গান শুনা ছাড়া কোন ধরনের বিরতি না নিয়ে চট্টগ্রামের পৌঁছে গেলাম। এর মধ্যে অবশ্য চৌদ্দগ্রামে একটা বিরতি ছিল খাওয়াদাওয়ার। আমরা যখন কক্সবাজার পৌঁছাই তখন ভোর হবে হবে ভাব। আল-আমিন ভাইকে নিয়ে যখন রওনা দেই তখনই ফজরের আজান দিলো।

একটা মসজিদের সামনে ছোট কাজ সারার জন্য ছোট্ট একটা বিরতি দেয়া হলো। তারপর আবার চলতে শুরু করলো আমাদের বাস। টেকনাফ পৌঁছানোর আগে বহু রহিঙ্গা শরণার্থীদের চোখে পড়লো। সবাই যে যেখানে পারে বসে আছে। চোখেমুখে একঝাঁক শূন্যতা। তাঁদের দেখার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমেই মাথার মধ্যে এসেছে যশোর রোডের কথা। ১৯৭১ সালে যশোর রোড অথবা অন্যান্য রাস্তা দিয়ে এভাবেই হয়তো আমাদের বাংলাদেশী শরণার্থীরা যে যা পারে তা হাতে নিয়ে রওনা হয়েছিলেন। মনে হচ্ছিল ১৯৭১ সালের ঐ দৃশ্য আর এই দৃশ্যের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সে এক অমানবিক দৃশ্য। শুধু তাকিয়ে দেখা ছাড়া আমাদের বুঝি আর কিছুই করার নেই।

অনেকটা মন খারাপ নিয়েই টেকনাফ বাস স্ট্যান্ডে নামলাম। আমরা এসেছি ঠিকই কিন্তু আমাদের সাইকেলের পিক-আপ তখনো এসে পৌঁছায় নাই। ঠিক হলো ট্রাক আসতে আসতে আমরা সবাই নাস্তা করে ফেলবো। যাতে ট্রাক আসার পরে সময় নষ্ট না হয়। কথামতো একে একে সবাই নাস্তা করে চলে আসলো। নাস্তার পরেই সবাইকে সবার টি-শার্ট বুঝিয়ে দেয়া হলো। সব কাজ শেষে বিশ্রাম নিতে নিতে এক সময় সাইকেলের ট্রাক চলে আসলো।

সাইকেলগুলা নামিয়ে ঠিক-ঠাক করে আমরা সবাই রওনা দিলাম আমাদের কাঙ্খিত মেরিনড্রাইভের পথে। ঠিক হলো মঈন ভাই সবার সামনে থাকবেন আর রাসেল ভাই সবার পিছনে। দেখা গেল প্রাথমিক রাস্তা তেমন কেউই চেনে না। আমার কিছুটা চেনাজানা ছিল, তাই আমি মঈন ভাইয়ের সঙ্গী হলাম। একটা লাইন ধরে আমরা চলতে শুরু করলাম। টেকনাফ শহর পার হয়ে আমরা এক সময় মেরিন ড্রাইভে উঠে পড়লাম অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই।

এর আগে আমরা যতবার মেরিনড্রাইভ বলে সাইকেল চালিয়েছিলাম সেটা আসলে পুরাপুরি মেরিনড্রাইভ ছিল না। কক্সবাজার থেকে ইনানী অথবা ইনানী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিনড্রাইভ ছিল। বাকিটা ছিল এলজিইডির রাস্তা। এতদিন আসলে মেরিনড্রাইভের কাজই শেষ হয় নাই। অল্প কিছুদিন আগে মেরিনড্রাইভের কাজ শেষ হলো এবং সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তবে এলজিইডির রাস্তাটাও খুব একটা খারাপ না। সমুদ্র একটু দূরে থাকে তবে পাহাড় অনেক কাছে থাকে, পাশাপাশি অনেক বড় বড় গাছ। মূল মেরিন ড্রাইভে গাছপালা খুব একটা নাই। মাত্র গাছ লাগানো হয়েছে, হয়তো কয়েক বছর পরে এখানটাও সাইক্লিংয়ের জন্য স্বর্গ হয়ে উঠবে।

মজার ব্যাপার হলো এর আগেও একবার এলজিইডি আর মেরিনড্রাইভে সাইকেল চালাতে এসে রোহিঙ্গার মতো একটা সমস্যা ছিল। তবে সেটা ছিল রামুর ঘটনার কারণে, রামুর বৌদ্ধ মন্দির ভাঙ্গার কারণে একটা থমথমে পরিস্থিতি চলছিল। আর এবার চলছে রোহিঙ্গা নিয়ে থমথমে পরিস্থিতি। গতবার কয়েকজন রামুর সমস্যার কারণে শেষ মুহূর্তে আসতে পারেন নাই। এবার অবশ্য একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল তবে শেষ পর্যন্ত সেই রকম কোন ঘটনা ঘটলো না।

রাস্তাটা একদম সমুদ্রের কাছে হওয়ার কারণে বার বার থামতে ইচ্ছা করে। কিন্তু বার বার থামাটা কঠিন, কারণ কক্সবাজার পর্যন্ত চালাতে হবে। প্রথমে অনেকের জোশ থাকলেও আস্তে আস্তে সবাই স্লো হয়ে যাচ্ছিল। আর আমাদের সঙ্গে দুইজন স্পিডমাস্টার আছে যাঁদের কাজই হলো রেস খেলা। ধ্রুব ভাই আর আল-আমিন ভাই। তাঁদের আবার আমাদের সঙ্গে চালানোটা ঠিক পোশায় না। সবার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে দুই স্পিডমাস্টার আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে তাঁদের কাউকেই আর আমরা চোখে দেখলাম না।

এই ভ্রমণটা ছিল আমার জন্য অনেক আনন্দের একটা বিষয়। বিশেষ করে এই ভ্রমণে আমর কোন দায়িত্ব নাই। কোন অতিরিক্ত চিন্তা নাই। এর আগে বেশির ভাগ ট্রিপেই নানা রকম দায়িত্ব থাকত। পুরা দলের দিকেই খেয়াল রাখতে হত কিন্তু এখানে একদম উল্টা। আমার কিছুই করতে হচ্ছে না, শুধু মনের আনন্দে চালিয়ে যাচ্ছি সবার সঙ্গে গল্প করতে করতে। প্রতিটা গ্রুপেই কিছু কামলা টাইপের লোকজন থাকে। যাঁদের কাজই হলো সব সময় কাজ করে যাওয়া আর দলের অন্যান্য নতুন পুরাতন সদস্যদের কাছ থেকে বকা শুনা। আবার এই মানুষগুলার জন্যই গ্রুপ টিকে থাকে, এঁরা না থাকলে গ্রুপ অচল। এই গ্রুপেও এমন দুইচারজন আছে, যেমন মঈন ভাই, ইয়াসির ভাই, রুবেল ভাই, রাসেল ভাই, লিটন ভাইসহ আরো দুয়েকজন। এর মধ্যে লিটন ভাই আবার পরিপূর্ণ ম্যাকগাইভার মানে সাইকেলের সমস্যা হইলেই তিনি দেখে দেন। একদম পরিপূর্ণ একটা দল।

এর মধ্যে একজন চলন্ত অবস্থায় ছবি তুলছিলেন আরেকজন সেই ছবিতে নিজেকে দেখাতে গিয়ে উল্টে পড়ে গেলেন। উনার সঙ্গে সঙ্গে আরো দুইয়েকজন পড়লেন যদিও তেমন কোন বড় সমস্যা হয়নি। যিনি প্রথমে পড়েছিলেন তিনিই সামান্য আহত হলেন। আমাদের সঙ্গে সঙ্গে সবসময় পিক-আপ ছিল। কয়েকজন ক্লান্তির কারণে সাইকেলসহ ট্রাকে উঠে গেলেন। যাঁরা পিক-আপে উঠেছে ভালোবেসে তাঁদের নাম দেয়া হলো ‘লুথা’ অর্থাৎ দুর্বল বা পারে নাই।

এই পথে মানুষজন খুবই কম। কিছুক্ষণ পর পর কিছু ট্যুরিস্টদের গাড়ি দেখা যাচ্ছিল। আর কিছু স্থানীয় সিএনজি অথবা অটো। শাপলাপুর বাজারে কয়েকজন খাওয়া দাওয়া করে নিলাম, বিশেষ করে পানীয় জাতীয় খাবারদাবার। রোধ থাকলেও দুইজনের কথা বলতে বলতে চালাতে তেমন খারাপ লাগছিল না। ইনানী বিচের কাছে এসে আরেকটা বিরতি দেয়া হলো। সবাই মিলে দোকান থেকে ডাব কিনে খাওয়া হলো। ডাবের সাইজ বেশ বড়ই ছিল বলা যায়, তাই একা খেতে কিছুটা কষ্টই হলো।

ইনানীর পর পর রাস্তায় গাড়ির চাপ অনেক বেড়ে গেল। বুঝা গেলো সাধারণ ট্যুরিস্টরা ইনানী পর্যন্তই আসে। অনেকে হয়তো এদিকে আসেই না কক্সবাজার শহরেই রয়ে যায়। শহর আর বিচ দেখে ফিরে যায়। কেউ কেউ হিমছড়ি আর ইনানীর দিকে ঘুরতে আসেন। হিমছড়ির দিকে দেখা গেল বেশ কিছু পিকনিক পার্টি। এই পার্টির মধ্যে আবার দুই রকম ভাগ আছে। কেউ কেউ রাস্তার পাশে বিশাল পাতিলে রান্না করে। দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে বিকালের পরে হয়তো গন্তব্যে রওনা দিবে। আরেকটা গ্রুপ বিরিয়ানির প্যাকেট নিয়ে আসছে। বেশিরভাগ লোকজনই খাওয়া শেষে প্যাকেটগুলা পথেই ফেলে যাচ্ছে। যেন নিজের ঘর ছাড়া পুরা দেশটাই একটা ডাস্টবিন!

কক্সবাজারে পৌঁছে আবিষ্কার করলাম আমি আর ইমরানই সবার শেষে পৌঁছেছি। মঈন ভাইসহ দুইতিন জন অপেক্ষা করছিল হোটেলে যাওয়ার জন্য আমরা পৌঁছানোর পরে রওনা দিলাম হোটেলের উদ্দেশে। হোটেলে গিয়ে জানতে পারলাম আমাদের স্পিডমাস্টাররা এখানে পৌঁছেছে ১২ টার দিকে। আর আমরা যখন পৌঁছালাম তখন ঘড়িতে সাড়ে তিনটা।

খাওয়া-দাওয়া গোসল শেষ করে বিচের দিকে গেলাম ঘুরতে। গিয়ে দেখি লোকজনে গিজ গিজ করছে। মনে হচ্ছিল ঢাকা শহরের অর্ধেক মানুষ সমুদ্র দেখতে চলে এসেছে। বিচে বেশিক্ষণ থাকলাম না, হোটেলে ফিরে আসলাম। বিচে ফিরলাম সন্ধ্যার পরে তখন লোকজন কিছুটা কমেছে, রাত প্রায় একটা পর্যন্ত বিচেই কাটিয়ে দিলাম। রুমে ফিরে শোয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘড়িতে প্রায় নয়টা। আমাদের বাস সন্ধ্যার পরে। নাস্তার পরে সবাই মিলে বিচে গেলাম ঘুরতে এবার আর আগের দিনের মতো একা একা না। পুরা দলসহ, কেউ সমুদ্রে দাপাদাপি করলো, আমরা কয়েকজন সবার মোবাইল আর জামাকাপড় পাহারা দিলাম। দুপুরের পরে সাইকেলগুলা পিক-আপে তুলে দেয়া হলো। পিক-আপ ছেড়ে দেয়ার পরেও আমাদের হাতে অনেক সময়। কেউ কেউ গেল শুটকি, আচারসহ কিছু কেনাকাটা করতে। কেউ কেউ গেলেন শেষবারের মতো বিচটা দেখে আসতে। ফিরে এসে ব্যাগ গুছিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা!

৩০ ভাদ্র ১৪২৪

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.