আমি সাধারণত ব্যস্ত থাকলে নতুন কাজ নেই না। এর মূল কারণ কথা দিয়ে যদি না রাখতে পারি সেই কারণে। এই ব্যস্ততার মাঝেও এক লেখক একটা ৩০০ পাতার মতো কাজ চাপিয়ে দিলেন। যত সময়ই লাগুক কাজটা আমাকেই করতে হবে। সত্যি কথা বলতে অনেকটা বিরক্তির সঙ্গেই কাজটা নিতে হয়েছে। বইটা হবে মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখা। বিরক্তি থাকলেও মুক্তিযুদ্ধের কারণে আলাদা একটা দায়ও কাজ করেছে, এটা অস্বীকার করবো না। এই পর্যন্ত যে কয়েকটা মুক্তিযুদ্ধের বই পড়েছি তার মধ্যে অন্যতম ছিল জাহানা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’। বইয়ে তাঁর ছেলে রুমীর কথা শুনে অদ্ভুত শিহরণ অনুভব করতাম। খুব আফসোস কাজ করতো রুমীর জন্য। আবার একটা মজার বিষয়ও আছে। রুমী সব সময়ই তরুণ থেকে গেছেন। তাঁকে বয়স্ক হিশাবে কল্পনা করা সম্ভব না কারণ তিনি অল্প বয়সেই মারা গিয়েছেন।
.
পাণ্ডুলিপিটা হাতে পাওয়ার পরে উৎসর্গ পাতা পড়ে আমার সকল বিরক্তি এক নিমিশে চলে গেছে। খুব বেশি কিছু বলা যাবে না বই সম্পর্কে। কার লেখা, বইয়ের নাম কি। কিচ্ছু বলা যাবে না। কারণ বইটা না বের হওয়া পর্যন্ত কোন তথ্যই দেয়া যাবে না এই বিষয়ে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তবে উৎসর্গ পাতার লেখাটা দেয়া যায়। লেখক যখন যুদ্ধে গিয়েছিলেন তখন তাঁর বয়স মাত্র ১৬ বছর, দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
.
.
এই বই আমি উৎসর্গ করছি
আমার মাকে
এবং
শাফি ইমাম রুমী, বীর বিক্রমকে
যিনি পাকিস্তানী আর্মির নির্মম
অত্যাচারে মারা গিয়েছেন কিন্তু আমার
নাম ও ঠিকানা গোপন করে রেখেছিলেন
এবং আমাকে ১৬ বছরের বেশি বাঁচতে দিয়েছিলেন।