৬৪ জেলায় যা দেখেছি–১৯

১৯ মার্চ (তিস্তা ব্যারেজ থেকে নীলফামারি)

আগের দিনেই একটা সাইনবোর্ডে লেখা দেখেছিলাম ব্যারেজের উপর ছবি তোলা নিষেধ। আর ব্যারেজে উঠার আগে গাড়ির জন্য ফি দিতে হতো। আমার সাইকেল অবশ্য এর আওতায় পড়েনি। ভোর হওয়ার কারণে গাড়ি বা ট্রাক বেশি নাই। অবশ্য এই রাস্তায় খুব বাস চোখে পড়েনি। বেশির ভাগই ট্রাক। আজ আমি যাব ডিমলা, ডোমার হয়ে নীলফামারি।

গতকাল রাতে খুব একটা ভাল ঘুম হয়নি। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নীলফামারি পৌঁছে একটা ঘুম দিতে চাই। তিস্তা ব্যারেজে উঠে আমি অনেকটা সময় কাটালাম। আগে কখনো আমার ব্যারেজ দেখা হয় নাই তাই মুগ্ধ হয়ে আশেপাশের দৃশ্য দেখছিলাম আর ব্যারেজটা দেখছিলাম। ব্রিজে কোন গার্ড ছিল না তাই দুয়েকটা ছবিও তুলে নিলাম।

ব্যারেজ পার হয়ে সামনে এগুতে থাকলাম। রাস্তায় খুব একটা লোকজনও নেই। অনেকদূর আসার পরে মনে হলো আমি ভুল পথে যাচ্ছি। কাউকে জিজ্ঞেস করবো সেই উপায়ও নাই। প্রায় এক কিলোমিটার পরে ছোট্ট একটা বাজার পেলাম। সেখানে কিছু লোকজন পাওয়া গেল, তাঁদের জিজ্ঞেস করাতে তাঁরা বললেন আমি ভুল পথে এসেছি। তবে কোন সমস্যা নাই গ্রামের ভিতর দিয়ে একটা রাস্তা আছে ঐ রাস্তা ধরে এগুলে আমার কাঙ্খিত রাস্তায় উঠতে পারবো।

তাঁদের দেখানো পথে আবার রওনা দিলাম। এই রাস্তাটা খুব একটা ভাল ছিল না। কাঁচাপাকা রাস্তা, আবার অনেক জায়গায় ধান ক্ষেতের ভিতর দিয়েও যেতে হচ্ছিল। এভাবেই এক সময় তিস্তা ট্যানেলে উঠলাম। সকালের হালকা রোধ পড়ছিল গায়ের উপর। বেশ অন্য রকম একটা আবহাওয়া। ট্যানেল শেষ হওয়ার পরে একটা সেতু পেলাম। খুব বেশি বড় না সেতুটি। সেতুটি পার হয়ে যেতে যেতে এক সময় পৌঁছালাম ডিমলা।

ডিমলায় লোকজনকে জিজ্ঞেস করে ডোমারের রাস্তা জেনে নিলাম। ডোমার হয়ে নীলফামারি পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুপুর হয়ে গেল। ঘড়িতে তখন একটা। শহরে পৌঁছেই হোটেল খোঁজা শুরু করলাম। মসজিদের পাশেই একটা হোটেল পেলাম পছন্দমত। রুমে ঢুকেই ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘণ্টা দুয়েক পর ঘুম ভাঙ্গলো। ঘুম থেকে উঠে গোসল করলাম। গোসল শেষে বাইরে বের হলাম খাওয়াদাওয়ার জন্য পাশাপাশি শহরটাও ঘুরে দেখার জন্য।
34748_1497982539421_8375187_n
শুক্রবার থাকার কারণেই শহরটাকে প্রাণহীন মনে হচ্ছিল। লোকজন খুবই কম। জেলা জেলা মনে হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল কোন একটা উপজেলা। এক হোটেলে ঢুকে খাওয়াদাওয়া করে আবার হোটেলে ফিরে আসলাম।

কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে আবার বের হলাম সন্ধ্যার পরে। এবার আর আগের মতো প্রাণহীন মনে হলো না। ভালই লোকজন পাওয়া গেল পথে ঘাটে। উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে বেশি ভাল লাগে না। তাই কিছুটা তাড়াতাড়িই রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে ফিরে ঘুমোতে চলে গেলাম।

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.