ছোটবেলায় একটা বেড়াল ছিল আমার কাছে। কোত্থেকে যেন আসছিল বাসায়, তারপর বেড়ালটাকে খাবার-দাবার দিতাম অনেক আদর করতাম। এক সময় কই যেন চলে গেল। খারাপ লাগছিল। ঠিক সেইভাবে একটা খরগোশও আসছিল। সেটারও একই অবস্থা। কিছুদিন এত মায়া বাড়ায়, তারপর হুট করে কই যেন চলে গেল। শেষবার আমরা তখন জাকির হোসেন রোডে থাকি, সেখানেও কোত্থেকে যেন একটা কোয়েল পাখি আসলো। সেই পাখির জন্য খাবার কিনলাম, থাকার জায়গার জন্য খাঁচা কিনলাম। সঙ্গে আরেকটা পাখিও আনা হইল। ডিমও দিছিল যতদূর মনে পড়ে। কিন্তু এখানেও একই অবস্থা, একটাকে মনে হয় নিজেরাই মারামারি করে মারা গেছিল। আরেকটা বেড়াল মেরে ফেলছে। বেড়ালটা যখন মেরে ফেলছিল তখন সুরাইয়া খুব উত্তেজিত হয়ে আমাকে ফোন দিছিল। আমার ভুলের জন্যই এটা হইছিল। আমি হয়তো কোন কারণে দরজাটা লাগাই নাই। সুরাইয়ার অনেক খারাপ লাগছিল আমার উপর অনেক রাগ করছিল। আমার নিজেরও অনেক খারাপ লাগছিল।
.
ঠিক করে রাখছিলাম কখনো কোন প্রাণী পালবো না। খুব কষ্ট হয়।
.
গতকাল এই প্রজাপতিটা বিকাল কি সন্ধ্যা থেকে বাসায় ঘুরাঘুরি করতেছিল। সারা রাত আমার সাথেই ছিল। কখনো বুকের উপর বসতেছিল, কখনো হাতে, কখনো কপালের উপরে। মাথার উপরে। একটুও ভয় পাচ্ছিল না। সব সময় দেখা যায় প্রজাপতি আসে আবার চলে যায়। ভোরের আগেই ঘুম ভাঙ্গছে তারপর আর ঘুম আসে নাই। জেগেই ছিলাম। আজানের পরে হয়তো কিছুক্ষণ আধা ঘণ্টার মতো চোখ বুঝেছি। উঠে ঘর ঝাড়ু দিতে গিয়ে দেখি প্রজাপতিটা পরে আছে। ভাবছিলাম হয়তো ঘুমাচ্ছে। একটু নাড়া দিয়ে দেখি না। প্রজাপতিটা আর বেঁচে নাই।
কেন জানি খুব খারাপ লাগলো। সম্ভবত এই যে আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো। আমার উপরে এসে বসলো, নিজে থেকেই এক ধরনের আদর করলো। তাও জীবনের শেষ সময়ে এসে। শেষ দিনটা কেন আমার সাথে কাটাতে আসলো?
আর অন্যান্য প্রাণিগুলাও বা কেন আসলো? আসছে তো নিজে থেকেই আসলো। আবার নিজে থেকে চলেও গেলো…
এইটা যে কেন হয়…
ছবিটা গতরাতেই তুলে রাখছিলাম।
২৪ কার্তিক ১৪৩২
