মানিব্যাগ

 
কালো রংয়ের মানিব্যাগটার বয়স প্রায় ১৬ বছর। এর আগে একটা মানিব্যাগ ছিল, নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে নাখালপাড়ায় ফেরার সময় হারিয়ে গিয়েছিল। তারপর আমার ছোট ভাই টুকু এই মানিব্যাগটা দিয়েছিল। এটা ব্যবহারের অনুপুযোগী হয়ে গিয়েছিল আরো অনেক আগেই কিন্তু ফেলা হচ্ছিল না। সুরাইয়া অনেকদিন ধরেই বলতেছিল এইটা পাল্টানো দরকার। আজ এটার শেষ ব্যবহার বলা যায়।
 
নতুন যে মানিব্যাগটি দেখা যাচ্ছে সেটি রুহি আপা আর ফয়সাল ভাই দিয়েছিলেন। দুইজনে নিজেরা জীবনসঙ্গী হলেও আমাদের কাছে তাঁরা ভাইবোনই। এই বিষয়টা অনেক মজার, বেশিরভাগই দেখা গেছে এই টাইপের মানুষগুলা আগে ভাইবোন ছিল কিন্তু তারপর বিয়ের পরেও ভাইবোনই রয়ে গেছে। ভাই-ভাবী অথবা বোন-দুলাভাই আর হতে পারে নাই।
 
আমাদের বিয়েতে কোন অনুষ্ঠান হয় নাই। কিন্তু অনেকেই নিজেদের বাসায় দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গেছে অথবা বাইরে কোথাও দেখা করার জন্য বলেছে। অনেকের বাসাতেই যেতে পারি নাই অথবা দেখা করতে পারি নাই। কিন্তু রুহি আপাদের বাসায় যেতে হয়েছিল। আরেকটা বিষয় হইল বিয়ের পরে যেখানেই গিয়েছি অথবা আগে যারা আমাকে সামান্য উপহারটুপহার দিতো বিয়ের পরে সবই বন্ধ হয়ে গেছে দেখা গেছে। ঐ মানুষগুলা আমার বদলে সুরাইয়াকেই দিয়েছে বেশিরভাগ সময়। আর দাওয়াত দিয়েও দেখা গেছে সব সুরাইয়াকেই দিচ্ছে, শাড়ি-জামা, এটাসেটা সবই সুরাইয়াকে দিচ্ছে। এমনকি কেউ একটা খাম ধরিয়ে দিয়েছে সেটা সুরাইয়ার হাতে। আমার হাতে আর কিছু আসে না।
 
তবে এখানে ব্যাতিক্রম হইছিল সুরাইয়ার সঙ্গে আমিও উপহার পেয়েছিলাম। এখন দেখা যাক ১৬ বছরের পুরনো মানিব্যাগের মতো এই মানিব্যাগটা যেন অনেকদিন সঙ্গী হয়ে থাকে। আর ফয়সাল ভাই রুহি আপাও যেন নিজেরা সঙ্গী হয়ে থাকেন আজীবন।
 
 
 
৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৬

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.