প্রেম ও আধ্যাত্মিকতা—সুরাইয়া বেগম

প্রকৃতি কখনও শূন্যতা পছন্দ করে না। যে কোন কারণেই হোক তা পূরণ করে দেয়। মানুষের জীবনেও এই সময়টা বারবার আসে। অলিগলি পথ ঘুরে তবুও মানুষ সঠিক পথটা পায়না। বিষন্নতা, বিভৎসতা, নিষ্ঠুরতা আর পরনিণ্দা ইত্যাদি দিয়েই মানুষ তার জীবন ডায়েরির অর্ধেকটা ভরিয়ে রাখে। জীবনে সুন্দর আর সুখকর কোন কিছুই মানুষ আকড়ে ধরলেও শেষ পর্যন্ত তা রক্ষা করার ক্ষমতা থাকে না। ভালবাসার সন্ধ্যানে মানুষ দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে থাকে কিন্তু মানুষ এটাই জানেনা অকৃপণ ভাবে কিছু দিলে তা ফেরত পাওয়ার জন্য ঘুরতে হয়না, সেটা এমনি নিজকে খুঁজে দিয়ে যায় ‍দ্বিগুণ করে।

উঁকিল মুন্সী তাঁর জীবনে শুধু ভালবাসার সন্ধ্যান করেছেন। সেটা কাঙ্খিত প্রেম আবার আধ্যাত্মিক প্রেমও। তাঁর  সেই বিখ্যাত গানটি “সোয়া চান পানি আমার আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি?” মনের কোথায় গিয়ে যেনো বাজতে থাকে। মনে হয় কেউ তার পুরো আকুল করা পাগলামি দিয়ে সাজিয়েছে হৃদয় আর সেখানে স্থান পাওয়া মানুষটা ধীরে ধীরে মলিন হয়ে যাচ্ছে।

ফকির লালন শাহ্ ঈশ্বরকে খুঁজতে থাকেন পুরোটা জীবন। এটা প্রকৃতি প্রেম। ঈশ্বর প্রেমই প্রকৃতি প্রেম। মানুষে মানুষে যে প্রেম সেটাও প্রকৃতির একটা অংশ। মানুষ ততদিনই প্রকৃতিতে থাকতে পারে যতদিন প্রকৃতি তাকে ভালবেসে আঁকড়ে ধরে রাখে। ফকির লালন শাহ্ তাঁর বিখ্যাত গান “মিলন হবে কত দিনে, আমার মনের মানুষেরও সনে?”

সত্যি তো আমরা যাকে চাই তার দেখা কি পাই? জীবন স্রোতে জানা অজানা কত অভাব এসে ভিড় জমায়। তবু এত অভাবের মাঝেও সৃষ্টিকর্তার অভাবটা আকুল হয়ে কবি মনে ধর্না দিয়ে যায়।

সময়ের সাথে সাথে মানুষ নিজেকে পাল্টানোর চেষ্ট করে। কেউ বাহ্যিক পরিবর্তণ করে নিজেকে পাল্টায়। কেউ মনের পরিবর্তণ করে নিজেকে পাল্টায়। আমি এখন যা তা আমার পূর্বের কর্মফল আর আমি ভবিষ্যতে যা হব তা আমার বর্তমানের কর্মফল। বেশি চিন্তা ভাবনা না করে যা পাচ্ছি তা নিয়েই মানুষ তৃপ্ত হতে পারেনা কেন? কারণ মানুষই কেবল এক অতৃপ্ত প্রাণী।

 

৭ জুলাই ২০১৯

Comments

comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.