সলিমুল্লাহ স্যারের সঙ্গে কাজ করার কারণে প্রায়ই পুরানা বইয়ের দোকানে যেতে হয়। স্যারের কথা হইল নতুন বইয়ের খোঁজ খবর তো সব সময় না চাইলেও আপনার সামনে আসবে। কিন্তু পুরানা বইয়ের খোঁজ সেইভাবে আপনার সামনে আসবে না। মাঝে মাঝে পুরানা বইয়ের দোকানে যাবেন, এমনি এমনি ঘুরবেন দেখবেন বিশেষ কিছু একটা পেয়ে গেছেন। আর দামও কম।
বাবু ভাই অনেকদিন আগে একটা গল্প বলছিলেন। উনার কোন বই খুব দরকার ছিল, অনেক ঘুরাফেরা করে পাচ্ছিলেন না। তাই শেষ পর্যন্ত দেশের বাইরে থেকে অনেকগুলা টাকা খরচ করে কাউকে দিয়ে আনিয়েছিলেন। সেই বই হাতে পাওয়ার পরে একদিন নীলক্ষেতে গিয়া একই বই ১০০ টাকা দিয়া কিনে আনছিলেন।
কক্সবাজারের এক কবি আছেন কুতুব হিলালী। হিলালী ভাই একটা কবিতার বই লিখেছিলেন নাম ‘পাপ হোক পূন্যের আধার’। সেই কবিতার বই মানুষকে দিতে দিতে আর এক কপিও অবশিষ্ট্য ছিল না। বাজারেও কিনতে পাওয়া যাচ্ছিল না। একদিন নীলক্ষেতে গিয়া হঠাৎ কবি তাঁর নিজের কবিতার বইটা পাইলেন। নিজের বই আবার নিজে কিনে হাসিমুখে ফিরে আসছিলেন। গল্প করতে করতে বলতেছিলেন সেটা ছিল অনেক আনন্দের একটা ঘটনা।
আজকে স্যারের সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে Ashrafuzzaman Uzzal ভাইয়ের একটা বই পেয়ে গেলাম। বইয়ের নাম ‘এবং পূর্ব আফ্রিকা’। কোন কারণে এই বইটা পড়া হয় নাই। উজ্জ্বল ভাইয়ের ‘সঙ্গী সাইকেল ও আরাধ্য পৃথিবী’ বইটা পড়েছিলাম। যখন বইটা পড়ি তখন উজ্জ্বল ভাইকে চিনি না। আমি তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ সাইক্লিং করার প্ল্যান করতেছিলাম, খুঁজতেছিলাম এই টাইপের কাজগুলা আগে কে করেছে। খুঁজতে খুঁজতেই কাকের ‘আহমদ ছফা মহাফেজখানা’য় বইটা পেয়েছিলাম। তারপর একদিন ফোনে কথাবার্তা। আর দেখা হওয়ার বিষয়টাও ছিল অন্য রকম ৬৪ জেলা ভ্রমণে ঝালকাঠিতে।
যাই হোক ‘এবং পূর্ব আফ্রিকা’ বইটা ৪০ টাকার বিনিময়ে কিনে ফেললাম। আমার একটা খারাপ অভ্যাস আছে। আমি সাধারণত নিজে যে বই কিনি সেই বই সাধারণ পড়ার পরে রাখি না। কোন একটা পাঠাগারে দান করে দেই। এই বইটারও আশ্রয় হবে কোন এক পাঠাগারে যেখানে নতুন নতুন পাঠকরা পড়বেন।
১৪ আষাঢ় ১৪২৫