আজ থেকে ছয় বছর আগের পিক৬৯ এর হোম ডেলিভারিগুলা এভাবেই হইত। প্রথম দিকের দিকে রাব্বি ভাই ফোন দিতেন। তারপর আমি বাসায় অথবা ইমনের চায়ের দোকানে গিয়ে প্রোডাক্ট আর ইনভয়েস নিয়ে আসতাম। মাঝে মাঝে ইমনের দোকানে জিনিশপত্র রেখে রাব্বি ভাই চলে যেতেন। পরবর্তীতে আজিজে দোকান খোলার পরে আর ফোন দিতেন না। আমার মেইলে অটো মেইল চলে আসতো। আমি দোকান থেকে জিনিশপত্র নিয়ে নিজের মত করেই ডেলিভারি দিয়ে আসতাম।
২০১০ সালের দিকে আমি যখন ৬৪ জেলা ঘুরার জন্য সাইকেল নিয়ে বের হবো প্ল্যান করতেছি। ঐ সময়কার একটা দিনে চারুকলা থেকে আড্ডা দিয়ে আমি রাহাত ভাই, রাব্বি ভাই ফিরছিলাম। তখন রাব্বি ভাই বলতেছিলেন তোমাকে একটা ওয়েবসাইট খুলে দিব, ভ্রমণের টুকটাক ঘটনা সাইটে তুলে রাখবা। কিন্তু কেন জানি তখন সাইটটা খোলা হয় নাই, সম্ভবত আমার অনাগ্রহের কারণেই। আমি তখন কিভাবে পোস্ট করতে হয় এইসব হাবিজাবি কিছুই বুঝতাম না। কিন্তু ২০১২ সালের দিকে এসে প্রচণ্ড আগ্রহ তৈরি হইল। কারণ ততদিনে আমি ফেসবুকের নোটে দুয়েকটা লেখা দিয়ে বেশ আগ্রহ বোধ করছিলাম।
আরেকটা ইন্সপায়ারের কারণ হইল রাব্বি ভাইয়ের লেখা। আমি প্রচণ্ড ভক্ত ছিলাম তাঁর লেখার প্রতি। ছোট্ট একটা ঘটনাও যে অসাধারণ একটা লেখা হয়ে যেতে পারে এবং সেই লেখা অন্য আরেকটা মানুষের জন্য ইন্সপায়ারের কারণ হতে পারে তা উনার লেখা না পড়লে বুঝতাম না। সেই জায়গা থেকেই ২০১২ সালের দিকের মাঝামাঝিতে রাব্বি ভাইকে গুতাগুতি শুরু করা। আজকের এই দিনে ঠিক ছয় বছর আগে রাব্বি ভাই অফিসিয়ালি আমার সাইটটি খুলে দিয়েছিলেন। যদিও এর আগেই একটা লেখা দিয়ে খুলেছিলেন। কিন্তু কিছু প্লাগিন ইন্সটল আর টুকটাক কিছু কাজের জন্য রেখে দিয়েছিলেন। সেই কাজ শেষে এইদিনে অফিসিয়ালি আমার ওয়েব সাইটের যাত্রা শুরু হয়েছিল বলা যায়।
কিন্তু একটা দুঃখের বিষয় হইল রাব্বি ভাই এখন আর ব্লগে লিখেন না। ২০০৯ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত অনেক লেখা লিখেছেন রাব্বি ভাই। এখনকার মানুষগুলা হয়তো রাব্বি ভাইয়ের সেই অসাধারণ লেখাগুলা দেখতেই পান নাই। পুরানা মানুষদের মধ্যে অন্যদের কথা জানি না, আমি কিছুদিন পর পরই রাব্বি ভাইয়ের ব্লগে ঢুকি। ঢুকে পুরানা লেখাগুলি পড়ি। ভ্রমণ বিষয়ক লেখাগুলি পড়তে তো ভাল লাগেই আরো বেশি ভালো লাগে উনার স্মৃতিচারণগুলা। ওনার বাবু চাচা সাইকেলের ঝুড়িতে বসিয়ে ঘুরতে নিয়ে যেতেন। তারপর স্কুলে কেজিতে ভর্তি হওয়ার সময় পিঁপড়া ইংরেজি কি জানতে চেয়েছিলেন টিচার। কত সাধারণ স্মৃতিচারণ কিন্তু সবার মধ্যেই এই ধরনের ছোটখাট ঘটনাগুলি ঘটে। আবার অনেক লেখার ভিতরে টুইস্ট আছে মনোযোগ দিয়ে না পড়লে ধরা কঠিন। অথবা খুব সাধারণ টাইপের জীবনযাপন করলে তো ধরাই যাবে না। যাঁদের জীবন উত্থান-পতনে ভরপুর তাঁরা খুব সহজে সেই সূক্ষ্ম টুইস্টগুলা ধরতে পারবেন।
সত্যি কথা বলতে রাব্বি ভাইয়ের লেখা না পড়লে আমি সাহস পেতাম না লেখালেখি করার। বিশেষ করে আমার জীবনী বা স্মৃতিচারণমূলক লেখাগুলা লেখা হতো না কোনদিন।
১৬ কার্তিক ১৪২৫