স্কুল লাইফে প্রচুর ব্যান্ডের গান শুনতাম, এখনো শুনি, তবে আগের চাইতে একটু কম। তখন অনেক সিডি কিনতাম পাড়ার দোকানের গান শুনে। এমনো হয়েছে একটা গান শুনে ভালো লাগছে ঐ সিডিটাই কিনেছি। আমার বেড়ে উঠা নাখাল পাড়ায়। নাখাল পাড়ায় দুয়েকজন থাকতেন এমন সদস্যদেরও একটা ব্যান্ড ছিল। নাখাল পাড়ার মানুষের কারণেই সম্ভবত একটা সিডি কিনেছিলাম। ব্যান্ডের নাম ছিল সাবকন্সাস। এই সাবকন্সাস অর্থ খুঁজার জন্য জীবনে প্রথমবারের মতো স্কুলের পড়ার বাইরে ইংরেজি বাংলা অভিধান দেখতে হয়েছিল। বলা যায় ঐটাই ছিল স্কুলের পড়ার বাইরে নতুন কোন শব্দের অনুসন্ধান। তাই সাবকন্সাস নামটা মনের মধ্যে গেথে গেছে। সেই সময়, এই একটা শব্দ খুঁজতে গিয়ে আরো দুইটা সমর্থক শব্দ শিখেছিলাম। কন্সাস আর আনকন্সাস।
তারও দীর্ঘদিন পরে যখন কাকে এসে কাজ শুরু করলাম তখন সলিমুল্লাহ স্যারের প্রথম যে ক্লাশটা পাই সেটার নাম ছিল ‘মনোবিশ্লেষণের কারখানা’। এখানে দেখলাম এই শব্দগুলার উপর ভিত্তি করে স্যার প্রতি শুক্রবারে লেকচার দিচ্ছেন। জাফর চাচার ভাষায় ওয়াজ করেন। স্যারের কাছে এসে শিখলাম একটা শব্দের উপর ভিত্তি করে কত কিছু বলা যায়। মাথা আওয়ালাইয়া যাওয়ার মতো অবস্থা। কন্সাস, সাবকন্সাস, আনকন্সাস শব্দগুলা খুবই ইন্টরেস্টিং। সঙ্গে ফ্রয়েড, লাকাঁ, লালন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল মিলিয়ে ওয়াজটাকে স্যার আরো এন্টারেস্টিং করে তুলতেন। সবাই দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা ধরে মুগ্ধ হয়ে স্যারের বক্তৃতা শুনতেন।
স্যার একদিন গল্প করতে করতে বলতেছিলেন। ‘আমার এই ক্লাশগুলাতে তো সাধারণ সুখী মানুষেরা আসে না। যাঁরা আসে বেশিরভাগই ব্যর্থই হয়ে। হয়তো প্রেমে ব্যর্থ অথবা কোন কাজে ব্যর্থ।’
আর ব্যর্থতার আরেক নামই তো প্রেম।
যেই সাবকন্সাস ব্যান্ডের জন্য এত কথা, গতকাল থেকে ঐ ব্যান্ডের গান শুনতেছি। তাই এই কথাগুলা মনে আসলো।
https://www.youtube.com/watch?v=Bk8GRr629ig&index=4&list=PLB5242FAE652A60CF
৪ আশ্বিন ১৪২৫