ঘরে বসে দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ হাতের মুঠোয়। এই রকম কথার একটা গান আছে মহিনের ঘোড়াগুলিদের। এই হাতের মুঠোর দুনিয়ায় টেলিফোনের যোগাযোগ দেখেছি, সেখানে ক্রস কানেকশনে অনেকের সঙ্গেই নাকি মানুষের পরিচয় ঘটতো। সেই সময়ের কোন অভিজ্ঞতা আমার নাই। তারপর আসলো মোবাইল ফোনে এখানে অপরিচিত অনেকের সঙ্গে মানুষের পরিচয় হয়। আমারও হয়েছে, তারপর ইন্টারনেটের দুনিয়াতেও অনেকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। ইন্টারনেটের কল্যানে আমরা যা ইচ্ছা তাই লিখতে পারি। আবার সঙ্গে সঙ্গে এর ফিডব্যাকেও পাই। লাইক, কমেন্ট, ম্যাসেজে ভাল হইছে খারাপ হইছে অনেক কিছু।
কিন্তু আমরা এখন পথের মাঝে আসা যাওয়ার মাঝে কারও দিকে তাকানোর সময় পাই না। কেন পাই না তা জানি না। আমি অনেক আগ্রহ নিয়ে মানুষ দেখি, মানুষের চলাফেরাও দেখি। কোন এক ইন্টারভিওতে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল. ‘আপনে ভ্রমণ করেন কেন?’ উত্তরে বলেছিলাম. ‘মানুষ দেখার জন্য।’ প্রায় বছর দুয়েক আগে পথের গল্প নামে একটা লেখা লিখেছিলাম। সেখানে একটা মেয়ের কথা উল্লেক করেছিলাম। আমরা কেউ কারও নাম জানি না, কিন্তু প্রতিদিন দেখা হয়। আমি আমার অফিসে সেও তার অফিসে যায়।
কোন এক পুঁজার ছুটিতে ভ্রমণে গিয়েছিলাম। আর কি একটা কাজে অফিসের বাইরে কাজ ছিল। সেটা প্রায় পনের দিন। এই পনের দিন মেয়েটার সঙ্গে দেখা হয় নাই। অনেকদিন পরে দেখা হওয়ার ফলে মেয়েটা নিজে থেকেই জিজ্ঞেস করলেন আপনে এতদিন কোথায় ছিলেন? আমি সাধারণত আগ বাড়িয়ে কথা বলতে পারি না। খুবই সমস্যা হয়, এ নিয়া হয়তো অনেক আমাকে মুডিও বলে। কিন্তু কেউ নিজে থেকে কথা বললে তো আর না করাও যায় না।
আর যদি সেটা কোন মেয়ে হয় তাহলে তো আরও নম্ভব না। আর আমার মতো কৃষ্ণদের (কালো) আরো সমস্যা। সেই দিন এই মেয়ের সঙ্গে হায় হ্যালো হইল। কে কোথায় কাজ করি, কোথায় থাকি তথ্য আদান প্রদান হইল। এর পরে প্রায়ই দেখা হলে হায় হ্যালো হইত। এক সময় আমার অফিস টাইমের কিছুটা পরিবর্তন হইল। অনেকগুলা মাস চলে গেল আর দেখা হয় না।
আজ হঠাৎ দেখা হয়ে গেল। আবার সেই হায় হ্যালো। আমাকে মনে মনে খোঁজার কথাও জানানো হইল। পাশাপাশি জানালো সে আগের চাকরী ছেড়ে দিয়েছিল তাই দেখা হয় নাই। আবার জয়েন্ট করেছে একই জায়গায় জয়েন্টের পর থেকেই আমাকে খুঁজছে। আমার নাম্বারও নেয় নাই তাই ফোন দিতে পারে নাই। এবার আর পুরানো ভুল করলেন না, নাম্বারটা রেখেই দিলেন…